কারেন্ট বিল বের করার নিয়ম

আমাদের দৈনন্দিন জীবনে কারেন্ট খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। কারণ কারেন্ট ছাড়া আমরা কোনভাবেই আমাদের জীবনকে পরিচালনা করতে পারব না। এই কারেন্ট ব্যবহার করে আমরা আমাদের দৈনন্দিন জীবনের সকল কাজ করে থাকি। যেমন আমাদের ঘরকে আলোকিত করার জন্য লাইট ব্যবহার করি, ফ্যান ব্যবহার করি, আমরা যে মোবাইল ব্যবহার করি তা চার্জ করার জন্য কারেন্ট প্রয়োজন, খাবারকে সতেজ রাখার জন্য যে ফ্রিজ ব্যবহার করি তাও কারেন্ট দ্বারা পরিচালিত হয়, আবার অনেক সময় আমরা খাবার রান্না করার ক্ষেত্রেও কারেন্টের চুলা ব্যবহার করে থাকি ইত্যাদি আরো অনেক বিষয় আছে যে সকল বিষয়গুলো আমাদের দৈনন্দিন জীবনে খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

বর্তমান সময়ে আমরা সকলেই কারেন্টের উপর নির্ভরশীল। তাই অনেক সময় আমাদের বাসা বাড়িতে কারেন্টের বিল প্রত্যেক মাসে আলাদা আলাদা রকম হয়। আর এই কারেন্টের বিল বিভিন্ন রকম হওয়ার কারণ কি এবং কারেন্টের বিল বেশি বা কম কেন আসে তা সম্পর্কে আমাদের সঠিক ধারণা থাকা উচিত। তাহলেই আমরা বুঝতে পারবো যে আমাদের কি পরিমান কারেন্ট ব্যবহার করলে এটি আমাদের জন্য সুবিধা জনক হবে। আজকের এই আর্টিকেলে আমরা কারেন্ট বিল বের করার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব।

মনে করি, প্রতিদিন ৬০ ওয়াটের একটি ফ্যান ৬ ঘণ্টা করে চলে। তাহলে এখন বের করতে হবে এই ফ্যান থেকে প্রতিদিন কয় টাকা কারেন্ট বিল আসে। সূত্রঃ E=pt 

এখানে E= বিদ্যুৎ খরচ

             p= পাওয়ার (৬০ ওয়াট )

              t= সময় (৬ ঘন্টা )

তাই, E = pt হলে (p ও t  এর মান বসাই ) 

        E = ৬০w*৬h

         E = ৩৬০wh

আমরা যদি wh কে ইউনিটে রূপান্তরিত করতে চাই তাহলে wh কে 1000 দিয়ে ভাগ করতে হবে।

     ৩৬০wh/১০০০ = ০.৩৬ kwh বা unit

আমি এটা একদিনের ফ্যানের কতটুকু ব্যবহার করা হয় তা বের করেছে। আপনি চাইলে এর সাথে ৩০ গুন করে দেখতে পারেন যে এক মাসে ফ্যানের জন্য কতটুকু ইউনিট ব্যবহৃত হয়। আর প্রতি ইউনিট কত টাকা করে এটি যদি আপনার সঠিকভাবে জানা থাকে তা সেই টাকার পরিমাণ এর সাথে কত ইউনিট ব্যবহার করেছেন তা গুণ করলে বুঝতে পারবেন যে আপনার কত টাকা কারেন্ট বিল এসেছে শুধুমাত্র ফ্যানের জন্য। আপনি চাইলে এইভাবে আপনার বাসা বাড়ির অন্যান্য সকল বৈদ্যুতিক জিনিসের জন্য কত ইউনিট ব্যবহার করছেন তা সহজে বের করতে পারবেন। আর আপনি যদি সঠিকভাবে কারেন্টের বিল বের করতে চান তাহলে আপনার ব্যবহৃত ইউনিটের সাথে মিনিমাম চার্জ, ভ্যাট ও অন্যান্য যে সকল সরকারি চার্জগুলো রয়েছে সেগুলো সঠিকভাবে যোগ করলে আপনার কারেন্টের বিলটি নিজেই বুঝতে পারবেন।

আরও পড়ুনঃ অনলাইনের মাধ্যমে কিভাবে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালের জন্য আবেদন করা যায় 

বর্তমান সময়ে আমাদের দেশে কারেন্টের বিল দিন দিন বেড়েই চলেছে। কারেন্টের প্রতি ইউনিটের বিল সকল জায়গায় একই রকম হয় না। বিভিন্ন জায়গায় কারেন্টের ইউনিট প্রতি কত টাকা হয়েছে তা বিভিন্ন রকম হয়। কারণ সকল জায়গা এবং সকল মানুষ একই প্রয়োজনের জন্য কারেন্ট ব্যবহার করে না। যেমন আমরা সকলে বাসা বাড়িতে কারেন্ট ব্যবহার করে থাকি, আবার অনেক কল কারখানাতেও কারেন্ট ব্যবহার করা হয়, বড় বড় গার্মেন্টস গুলোতেও কারেন্ট ব্যবহার করা হয় ইত্যাদি অনেক জায়গায় অনেক রকম কাজের জন্যই কারেন্ট ব্যবহার করা হয়ে থাকে। হলে সে ক্ষেত্রে কারেন্ট বিল এর ইউনিট প্রতি কত টাকা  তা বিভিন্ন রকম হয়। আজকে আমরা জানব কারেন্ট বিল এর জন্য ইউনিট  কত টাকা ।

• ০ থেকে ৫০ পর্যন্ত ইউনিট প্রতি ৪.৬৩ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে
• ০ থেকে ৭৫ পর্যন্ত ইউনিট প্রতি ৫.২৬ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে
• ৭৬ থেকে ২০০ পর্যন্ত ইউনিট প্রতি ৭.২০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে
• ২০১ থেকে ৩০০ পর্যন্ত ইউনিট প্রতি ৭.৫৯ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে
• ৩০১ থেকে ৪০০ পর্যন্ত ইউনিট প্রতি ৮.০২ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে
• কৃষি সেচের জন্য ইউনিট প্রতি ৫.২৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে
• বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও বিভিন্ন হাসপাতালের জন্য ইউনিট প্রতি ৭.৭৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে
• শিল্প কারখানার ক্ষেত্রে ইউনিট প্রতি ১০.৮৮ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে
• রাস্তার বাতি, পানের পাম্প ও অন্যান্য জিনিসের জন্য ইউনিট প্রতি ৯.৭১ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে
• বাণিজ্যিক ও অফিসের ক্ষেত্রে ইউনিট প্রতি ১৩.০১ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে

এর মাধ্যমে আমরা সহজেই আমাদের ব্যবহৃত মোট ইউনিট সমান কত টাকা হয়েছে তা সহজেই জানতে পারবো। এবং এটি আমাদেরকে আরো সাশ্রয় এবং কারেন্ট সঠিকভাবে ব্যবহার করার ক্ষেত্রে সাহায্য করবে। কারণ আমাদের কারোরই উচিত না প্রয়োজনের চেয়ে বেশি বিদ্যুৎ অপচয় করা। আমরা যদি বিদ্যুৎ অপচয় করি তাহলে ভবিষ্যতে আমরা বিদ্যুৎ ঘাটতি সম্মুখীন হব। সুতরাং এটি আমাদেরকে কারেন্টের বিল এর ইউনিট এর জন্য কত টাকা হয়েছে তা জানতে সাহায্য করবে।

আজকের এই সময়ে আমরা সকলেই আমাদের জীবন যাপনের জন্য কারেন্ট ব্যবহার করে থাকে। কিন্তু আমরা অনেকেই জানি না যে এই কারেন্টের বিল কত ধরনের হয়। আজকে এই আর্টিকেল থেকে আমরা জানতে পারবো কারেন্টের বিল কত ধরনের হয়ে থাকে। কারেন্টের বিল সাধারণত দুই ধরনের হয়ে থাকে। একটি হল প্রিপেইড বিল আর আরেকটি হলো পোস্টপেইড । এই দুই ভাবেই আমরা চাইলে কারেন্ট ব্যবহার করতে পারি। আমরা সাধারণত প্রিপেইড বা পোস্টপেইড সম্পর্কে তেমন একটা ধারণা রাখি না। কারণ আমরা সকলেই জানি সারা মাস কারেন্ট ব্যবহার করার পরে কারেন্ট বিল আসে। কিন্তু আজকে আমরা জানবো এই প্রিপেইড ও পোস্টপেইড বিষয়টা সম্পর্কে।

প্রথমত প্রিপেইড হলো মিটারে ব্যালেন্স রিসার্চ করার মাধ্যমে আমরা যে কারেন্ট ব্যবহার করে থাকি সেটি । আর পোস্টপেইড হল সাধারণত আমরা সারা মাস যে কারেন্ট ব্যবহার করার পরে কারেন্ট বিল পরিশোধ করি সেটি । আমাদের দেশে আমরা বেশিরভাগ মানুষই পোস্টপেইড আকারে কারেন্টের বিল পরিশোধ করে থাকে। কিন্তু কিছু কিছু ক্ষেত্রে আমরা প্রিপেইড বা মিটার ব্যালেন্স রিসার্চ করার মাধ্যমেও কারেন্ট ব্যবহার করি। এর ফলে আমরা মিটারে যতটুকু ব্যালেন্স রিসার্চ করব সে পরিমাণ কারেন্ট আমরা ব্যবহার করতে পারব তার বেশি ব্যবহার করা যায় না। সুতরাং এই বিষয়টিও আমাদের অনেক ক্ষেত্রে পরিমাণ মতো কারেন্ট ব্যবহার করতে সাহায্য করে থাকে।

সাধারণত আমরা বাসা বাড়িতে বিভিন্ন রকমের ইলেকট্রিক্যাল যন্ত্রপাতি আমাদের দৈনন্দিন জীবনে ব্যবহার করে থাকে। যা আমাদের জীবনকে সহজভাবে পরিচালনা করতে সাহায্য করে। সেই সকল ইলেকট্রিক্যাল জিনিস ব্যবহারের ফলে আমাদের কি পরিমান ইউনিট ব্যবহৃত হয় এবং প্রতিটি ইলেকট্রিক্যাল জিনিসে কত ওয়াট পরিমান আমরা ব্যবহার করে থাকি তা সম্পর্কে আজকে বিস্তারিত আলোচনা করব। 

আমরা আমাদের বাসা বাড়িতে যে সকল লাইট ব্যবহার করি তা সাধারনত ২০ থেকে ২০০ ওয়াটের মধ্যে হয়ে থাকে। ফ্যান সাধারণত ৬০ থেকে ৮০ ওয়াটের মধ্যে হয়ে থাকে। টেলিভিশন সাধারণত ২৫ থেকে ১০০ ওয়াটের মধ্যে হয়ে থাকে । আবার আমরা যে সকল ফ্রিজ গুলো ব্যবহার করি সেগুলো সাধারণত ৮০ থেকে ২০০ ওয়াটের মধ্যে থাকে । আর পানি তোলার জন্য যে পাম্প মটর ব্যবহার করা হয় সেগুলো সাধারণত ১\৮ থেকে ৩ হর্স পাওয়ার হয়ে থাকে । এই সকল ইলেকট্রিক্যাল জিনিস সাধারণত কমবেশি সকল বাড়িতেই ব্যবহারিত হয়ে থাকে। এছাড়াও অনেক বাড়িতে অনেক ইলেকট্রিক্যাল জিনিস ব্যবহার করা  হয় । সেই সকল ইলেকট্রিক্যাল জিনিসের আলাদা আলাদা ওয়াট পাওয়ার হয়ে থাকে ।

বাসা বাড়ির কারেন্ট বিল হিসাব করার জন্য আমরা একটি উদাহরণ ব্যবহার করতে পারি। যেমন ধরি একটি বাসাতে ৮০ ওয়াটের দুইটা ফ্যান, ৪০ ওয়াটের চারটা লাইট , ২ হর্সপাওয়ার এর একটি পানি তোলার পাম্প মটর চলে। এ ক্ষেত্রে প্রতিদিন লাইট জলে ৬ ঘন্টা এবং ফ্যান চলে ৮ ঘন্টা আর পাম্প মটর চলে ১ ঘন্টা তাহলে এক মাসের কারেন্টের কত ইউনিট খরচ হবে এবং সেই ইউনিট এ কত টাকা বিল আসবে। আর এই প্রতি ইউনিটের মূল্য যদি ৭.২ টাকা ধরা হয়। 

আমরা জানি সূত্র অনুযায়ী, E = pt

E = বিদ্যুৎ খরচ

p = ওয়াট 

t = সময়

তাহলে ৮০ ওয়াটের একটা ফ্যান ৮ ঘন্টা চললে বিদ্যুৎ খরচ হবে =  ৮০*৮ =৬৪০ ওয়াট 

অতএব ৮০ ওয়াটের দুইটা ফ্যান ৮ ঘন্টা চললে বিদ্যুৎ খরচ হবে =৬৪০*২ = ১২৮০ ওয়াট 

 আবার ৪০ ওয়াটের একটা লাইট ৬ ঘন্টা চললে বিদ্যুৎ খরচ হবে =৪০*৬ =২৪০ ওয়াট 

তাহলে ৪০ ওয়াটের চারটা লাইট ৬ ঘন্টা চললে বিদ্যুৎ খরচ হবে = ২৪০*৪ =৯৬০ ওয়াট 

পাম্প মোটরের ক্ষেত্রে যেহেতু হর্স পাওয়ার ব্যবহার করা হয় সেক্ষেত্রে হর্সপাওয়ারকে ওয়াটে পরিণত করতে হয়। আর এই হর্স পাওয়ার কে পরিণত করতে হলে ৭৪৬ দিয়ে গুন করতে হয়।

২ হর্সপাওয়ার এর একটি পাম্প মটর ১ ঘন্টা চলে বিদ্যুৎ খরচ হবে =২*৭৪৬=১৪৯২  ওয়াট  

তাহলে একদিনে সর্বমোট যে পরিমাণ ওয়ার্ড খরচ হচ্ছে তাহলে = ১২৮০ + ৯৬০ +১৪৯২ =৩৭৩২ ওয়াট।

এখন এই ওয়াট কে ইউনিটে রূপান্তরিত করতে হবে। ইউনিটে রূপান্তরিত করতে হলে ওয়ার্ড কে 1000 দিয়ে ভাগ করতে হবে।

সুতরাং, ১দিনে যে পরিমাণ ইউনিট খরচ হয় তা হল = ৩৭৩২/১০০০ = ৩.৭৩২ ইউনিট

              ৩০ দিনে যে পরিমাণ ইউনিট খরচ হয় তা হল = ৩.৭৩২*৩০ = ১১১.৯৬ ইউনিট

আর প্রতি ইউনিটের মূল্য যদি ৭.২ টাকা হয় তাহলে ওই মাসে যে পরিমাণ টাকা কারেন্ট বিল হবে তা হল= ১১১.৯৬*৭.২ = ৮০৬. ১১২ টাকা।

তাহলে ওই মাসের কারেন্ট বিল হবে ৮০৬.১১২ টাকা।

আমাদের জীবনে কারেন্ট খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। কারণ কারেন্ট ছাড়া আমরা আমাদের জীবনের একটি মুহূর্ত অতিক্রম করতে পারি না। যখন কারেন্ট থাকে না তখন আমরা এর উপকারিতা ও গুরুত্ব সম্পর্কে খুব ভালোভাবে বুঝতে পারি। বর্তমানে তাপমাত্রা যে হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে সেজন্য আমরা ফ্যান অথবা এয়ারকুলার এর ব্যবহার অনেক অংশে বাড়িয়ে দিয়েছে। এছাড়াও অন্যান্য অনেক কারণ আছে যার ফলে আমাদের কারেন্টের বিল তুলনামূলক অনেক বেশি আসে। যে সকল বিষয়গুলোর ফলে আমাদের কারেন্ট বিল অত্যধিক পরিমাণ হয়ে থাকে সে সকল কারণগুলো নিচে উল্লেখ করা হলো । যেমনঃ

• আমরা যে সকল ইলেকট্রিক্যাল জিনিস ব্যবহার করি সেগুলো যদি নিম্নমানের হয়ে থাকে সে ক্ষেত্রে বিদ্যুৎ বিল বেশি আসে।
• আমাদের বাড়িতে ব্যবহৃত বৈদ্যুতিক তার যদি খারাপ মানে হয়ে থাকে সেই ক্ষেত্রে অনেক সময় ভোল্টেজ ওঠানামা করে এবং কারেন্টের বিল সে ক্ষেত্রে অনেক অংশে বেশি আসে।
• কারেন্টের যে মিটার আমরা ব্যবহার করি সেই মিটারে যদি কোন প্রকার যান্ত্রিক ত্রুটি থাকে সে ক্ষেত্রে কারেন্টের বিল বেশি আসে।
• লাইটের সুইচ বা ফ্যানের রেগুলেটরে কোন ত্রুটি থাকলে কারেন্ট বিল বেশি আসার সম্ভাবনা থাকে।
• আবার আমরা যদি অপ্রয়োজনীয় ভাবে লাইট অথবা ফ্যান চালু করে রেখে দেই সে ক্ষেত্রে কারেন্ট বিল বেশি আসে।
• আবার অনেক সময় আমাদের বাসা বাড়িতে যারা কারেন্ট বিল এর কাগজ লিখতে আসে তারা যদি অসতর্কতা বসত ভুল লিখে নিয়ে যায় সে ক্ষেত্রে কারেন্ট বিল বেশি আসা সম্ভাবনা থাকে।

কারেন্ট আমাদের পুরো বিশ্বকে আধুনিকতার চূড়ান্ত পর্যায়ে নিয়ে যেতে সাহায্য করে। আমাদের দৈনন্দিন জীবন এ আমরা কোনভাবেই বিদ্যুৎ ছাড়া কল্পনা করতে পারি না। কারণ বর্তমান সময় আমরা যে সকল জিনিস অথবা যন্ত্রপাতি সমূহ ব্যবহার করি সকল কিছুই কারেন্টের মাধ্যমে চলে। যার কারণে আমাদের বিদ্যুৎ বিল অনেক সময় পরিমাণ এর চেয়েও অনেক বেশি আসে। অসাবধান ভাবে কারেন্ট ব্যবহার করার ফলে বিদ্যুৎ বিল বেশি আসে ।কারেন্ট আমাদের জন্য অনেক মূল্যবান একটি জিনিস ।আমরা যদি এই কারেন্ত প্রয়োজনের বাহিরে ব্যবহার করে থাকি তা হলে এক সময় আমরা ক্ষতির সম্মুখীন হবো। তাই আমাদের সবার জানা উচিত কিভাবে ব্যবহার করলে কারেন্ট বিল কম আসবে ।

• আমাদের বাসা বাড়িতে আমরা যে সকল তার ব্যবহার করি সেগুলো মান সম্মত হতে হবে।
• যেসকল যন্ত্রপাতি ব্যাবহার করলে কারেন্ট বিল কম আসবে সেসকল যন্ত্রপাতি ব্যবহার করা উচিত।
• আমরা চাইলে সূর্যের আলো ব্যবহার করতে পারি এর ফলে লোডশেডিং হওয়ার সম্ভবনা নাই ।
• অকারনে সুইচ অন করে রাখব না , প্রয়োজন শেষ হলে সুইচ অফ করে দিব। 
• কারেন্ট এর মিটার এ কোন প্রকার  যান্ত্রিক সমস্যা আসে কিনা তা খেয়াল রাখতে হবে।
• আরথিং এর ব্যাবহার সঠিক ভাবে করা হয়েছে কি না তা খেয়াল রাখতে হবে।
• কারেন্ট এর জিনিস গুলা সঠিক ভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করতে হবে। 
• এসি ব্যবহার করলে তা সাভাবিক তাপমাত্রায় রাখতে হবে।

আমরা যদি এই সকল বিষয় গুলো সঠিক ভাবে মেনে চলে তা হলে আমরা আমাদের কারেন্ট বিল কমাতে পারবো । আবার এটি আমাদের কারেন্ট এর ঘাটতি কমাতে সাহায্য করবে ।এর ফলে আমরা ভবিষ্যতে কারেন্ট এর কন সমস্যা হলে তা মোকাবেলা করতে পারবো । যার ফলে আমাদের কারেন্ট খরচ ও কম হবে।

আরও পড়ুনঃবিদ্যুৎ বিল কমানোর জন্য গুরুত্বপূর্ণ উপায় সম্পর্কে আলোচনা 

আমরা আমাদের প্রয়োজনের জন্য কারেন্ট ব্যবহার করে থাকি ।আমরা এটি ব্যবহার করার জন্য সরকারকে টাকা দেই ।আর এই বিল এর মধ্যে যে টাকার পরিমান থাকে সেটা যে শুধুমাত্র কারেন্ট এর ইউনিট এর টাকা তা না। এর মধ্যে আরও কিছু বিষয় যুক্ত থাকে তা নিয়ে আজকে আলোচনা করব । কারেন্ট বিল দুইটি বিষয়ের উপর নির্ভরশীল । প্রথমত যে পরিমান কারেন্ট খরচ হয়েছে তার উপর আর দ্বিতীয়ত সরকারি বিভিন্ন কর, ফি, মিটার ভাড়া ইত্যাদি বিষয় গুলো যুক্ত করে আমরা আমাদের কারেন্ট এর মোট টাকার পরিমান জানতে পারি । 

আমরা কারেন্ট এর বিলের যে সরকারি কাগজ পেয়ে থাকি তার মধ্যে এই সকল বিষয় যুক্ত করা থাকে ।

এই সকল কর বা মিটার ভাড়ার টাকার পরিমান যদি আমরা সঠিক ভাবে জানি তা হলে আমরা ঘরে বসে আমাদের বাসা বাড়ির কারেন্ট এর বিল সহজেই বের করতে পারবো । আর কারেন্ট বিল বের করার নিয়ম এই বিষয়ের মধ্যে এটি সম্পূর্ণ ভাবে যুক্ত আছে ।

বর্তমানে বাংলাদেশ একটি ডিজিটাল দেশে রুপান্তরিত হয়েছে ।যার ফলে আমরা ঘরে বসেই অনেক কাজ সহজেই করতে পারি। আমরা আমাদের বাসা বাড়ির কারেন্ট বিল অনলাইনের মাদ্ধমে পরিশোধ করতে পারি । আজকে আমরা জানব কি ভাবে সঠিক নিয়মে অনলাইনের মাদ্ধমে কারেন্ট বিল পরিশোধ করব ।চলুন শুরু করা যাক ।

মোবাইল অথবা ল্যাপটপ এ ইন্টারনেট সংযুক্ত করে বিকাশ অ্যাপ এ প্রবেশ করুন।তারপর পে বিল নামক একটি অপশন থাকবে এতে ক্লিক করুন। তারপরে ইলেকটিসিটি অপশনে ক্লিক করতে হবে । এর মধ্যে পল্লী বিদ্যুৎ নামক একটি অপশন থাকবে এটি সিলেক্ট করতে হবে। এর ভিতর পে বিল অপশন ক্লিক করতে হবে। তারপর আকাউন্ট নাম্বার সিলেক্ট করে তাতে আকাউন্ট নাম্বার দিতে হবে। আর সেই বিলের মাস,বছর ,দিন এবং টাকার পরিমান সঠিক ভাবে বসাতে হবে। তারপর পিন নাম্বার দিতে হবে এবং সব শেষে কনফরমেশন মেসেজ ও বিল পেমেন্ট মেসেজ পাবেন ।

আপনি চাইলে ঘরে বসে এই নিয়ম মেনে সহজে কারেন্ট বিল অনলাইনের মাদ্ধমে পরিশোধ করতে পারবেন ।যার ফলে আপনার সময় অনেক বেচে যাবে এবং কষ্ট করে অফিসে গিয়ে লাইন এ দাড়িয়ে থেকে বিল দিতে হবে না। 

আরও পড়ুনঃ ঘরে বসে চাকরির জন্য আবেদন করার নিয়ম 

আজকের এই আর্টিকেল থেকে আমরা জানতে পারলাম কারেন্ট বিল বের করার নিয়ম সম্পরকে ।এছাড়া আর অনেক বিষয় সম্পর্কে জানতে পেরেছি যা কারেন্ট বিল এর সাথে সম্পর্কিত ।যেমন ঃ কি কারণে কারেন্ট বিল বেশি আসে , কি ভাবে কারেন্ট  ব্যাবহার করলে বিল কম আসবে, কি ভাবে অনলাইনের মাধমে ঘরে বসে কারেন্ট বিল পরিশোধ করা যায় ,কারেন্ট বিল এর সাথে আরও কি কি বিষয় যুক্ত থাকে ইত্যাদি বিষয় সমূহ এই আর্টিকেল এ আলোচনা করা হয়েছে । যা থেকে আশা করি আপনারা উপকার পাবেন।

আর এই কারেন্ট বিল সম্পর্কে আপনাদের কোন মতামত থাকলে তা অবশ্যই কমেন্ট করে আমাকে জানাবেন এবং এই আর্টিকেল টি আপনার কাছে ভালো লাগলে অবশ্যই আপনার আত্মীয় স্বজন সকলের সাথে শেয়ার করবেন। দোয়া করি ভালো থাকবেন ,ধন্যবাদ ।